নিজস্ব প্রতিবেদক: র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন ও আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনার জন্য নিয়মিত সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে থাকে।
গত ০৮ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিজ্ঞ নারী ও শিশু ও নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল উক্ত আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে বর্ণিত বিষয়ে আসামীর গ্রেফতারে র্যাব গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করে। এক পর্যায়ে র্যাব-১১ ও র্যাব-১৩ এর যৌথ একটি গোয়েন্দা দল গোপন তথ্যের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডসাজাপ্রাপ্ত আসামীর অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। ফলশ্রুতিতে র্যাব উক্ত আসামীকে গ্রেতারের উদ্দেশ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় ব্যাটালিয়ন সদর কোম্পানি, র্যাব-১১ ও র্যাব-১৩ এর যৌথ অভিযানে গত ১১ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামীর নিজ বাড়ী হতে মোঃ আশরাফুল আলম (৩৬), পিতা- মৃত সোলেমান আলী, মাতা- মোসাঃ খায়েরা বানু, সাং- মহিষখোচা, থানা- আদিতমারী, জেলা- লালমনিরহাট, এপি/সাং-সানারপাড় সাইফুলের বাড়ির ভাড়াটিয়া, থানা-সিদ্ধিরগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ’কে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, গত ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সানারপাড় এলাকার রহমান টাওয়ারের চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া ভিকটিম লায়লা বেগমকে,পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার ভাড়া বাসায় ঢুকে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আসামি মোঃ আশরাফুল আলম ভিকটিমের মুখে কোল বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের ছোট ভাই ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী বাসায় এসে দেখতে পায় যে, রুমের ভিতরে খাটের উপরে নিহত লায়লা এর মৃত দেহ সম্পূর্ণ উলঙ্গ অবস্থায় পড়ে আছে এবং তার মুখের উপর কোল বালিশ চাপা দেওয়া। নিহত লায়লা (৩০) শরিয়তপুর জেলার গোসাইর হাট থানার দক্ষিণ ছয়গাও গ্রামের আলাউদ্দিন মাতুব্বরের মেয়ে।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই মোঃ মশিউর রহমান বাদী হয়ে উক্ত আসামীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-৪৭(১০)১৮, তারিখ-২৫/১০/২০১৮ ইং, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০( সংশোধনী-২০০৩) এর ৯(২) এবং নারী ও শিশু মামলা নং-৪১১/১৯। বিজ্ঞ নারী ও শিশু ও নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত, নারায়ণগঞ্জ বিচার শেষে উক্ত আসামির বিরুদ্ধে আনীত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ৯(২) ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গত ০৮ ফেব্রুয়ারি ধর্ষণ করে বাদীর বড় বোনকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মোঃ আশরাফুল আলম (৩৬)’কে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে।
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামীকে র্যাব-১১ ও র্যাব-১৩ এর যৌথ আভিযানিক গোয়েন্দা দল কর্তৃক গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।