নিজস্ব প্রতিবেদক: যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক পালিত হয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস। এ উপলক্ষ্যে রাজউক এর প্রধান কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সহ দেশের জন্য আত্মত্যাগকারী সকল শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং রাজধানী ঢাকা সহ সমগ্র দেশের মঙ্গল কামনা করে আয়োজন করা হয় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। একটি বৈষম্যহীন, সুন্দর ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে রাজউক কর্তৃক উদযাপিত হচ্ছে এ বছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রিয়াজুল ইসলাম সহ রাজউক এর সকল স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে রাজউক এর সদস্য (পরিকল্পনা) আব্দুল কাদির বলেন, "জুলাই শহীদদের গেজেটে ১৩৪ জন শিশু সহ দেশের জন্য যারা আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। যে কারণে ৭১ হয়েছিল, ৪৭ হয়েছিল, ৯০ হয়েছিল, ২০২৪ ও সেই একই কারণে হয়েছে। আর সেই কারণ হলো- বৈষম্য, শোষণ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনতার জাগরণ। আমরা হয়তো পুরো দেশের জন্য একা কিছু করতে পারবো না, কিন্তু যদি নিজের অবস্থান থেকে নিজের পরিসরের কাজটুকু সঠিক ভাবে করলেই দেশের উপকার হবে।"
এসময় রাজউক এর সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) শেখ মতিয়ার রহমান বলেন, "বিগত ১৭ বছরে গুম খুন আর আয়নাঘরের ভয়ে সাধারণ মানুষ প্রাণ খুলে কথাও বলতে পারেনি। পুরো দেশকে একটি কলোনি বানিয়ে ফেলা হয়েছিল যা এখনো সম্পূর্ণরূপে স্বাবলম্বী হিসেবে দাড়াতে পারেনি। এর জন্য আমাদের সকল পর্যায়ে আরও অনেক কাজ করতে হবে। জনগণকে সঠিকভাবে সেবা দিতে হবে।"
আলোচনা সভায় রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রিয়াজুল ইসলাম বলেন, "আমরা যদি দেশের স্বার্থে কাজ করি, কোন ফ্যাসিস্ট সরকার বা অন্য কেও আমাদের দিয়ে কোন খারাপ কাজ করিয়ে নিতে পারবে না। বরং নিজের স্বার্থে কাজ করতে গেলেই আমাদের মাধ্যমে খারাপ কাজ ও অন্যের ক্ষতি হওয়া সম্ভব। "অনেকেই আজকের দিনকে ৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্ট বলছেন, কিন্তু আমি একে বলবো দ্বিতীয় স্বাধীনতা"। প্রথম স্বাধীনতা কে আমরা ধরে রাখতে পারিনি তাই আমাদের জন্য অতীব জরুরী ছিল এই নতুন স্বাধীনতা। যার সূচনা হয়েছিল ১/১১ এর পর থেকেই। আজকের যুব সমাজ যেই নতুন স্বাধীনতা এনেছে, তার পথ তৈরী হয়েছে গত ১৭ বছরে।"
রাজউক চেয়ারম্যান আরও বলেন, "২৪ এর জুলাই এ সকল শ্রেণির মানুষ রাস্তায় নেমেছিল, তার ফলশ্রুতিতেই এসেছে শোষণের অবসান। আবু সাঈদ, মুগ্ধ সহ অন্যান্য শহীদেরা আমাদের জন্য মানুষের সেবা করার যে পথ সুগম করে দিয়েছে, তার অনুপ্রেরণায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো মানুষের সেবা প্রদানের। আমি অনুরোধ করবো, আমি যদি নাও থাকি, যেই থাকুক, যে সরকারই আসুক, আপনারা অনুগ্রহ করে অন্যায়ের সাথে কোন আপোষ করবেন না।"
এসময় মাইলস্টোনের যে সম্মানিত শিক্ষিকাবৃন্দ নিজেদের সন্তানদের কথা চিন্তা না করে শিশুদের বাঁচাতে গিয়ে আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের অনুসরণ করে নিঃস্বার্থ ভাবে মানুষের সেবা করে যাওয়ার জন্য রাজউক এর সকলকে অনুরোধ জানান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রিয়াজুল ইসলাম।আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন রাজউক এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।
আলোচনা অনুষ্ঠানের শেষে ২০২৪ এর জুলাই আন্দোলনের সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ও ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসানে শুকরিয়া জ্ঞাপন করে এবং ঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশের মঙ্গল প্রত্যাশায় দোয়া করা হয়। এসময় রাজউক এর সকল কর্মকর্তা কর্মচারী যেন সততা ও সুষ্ঠতার সাথে তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন সে কামনা করা হয়।